জেলার খবর

স্ত্রীর হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা চেস্টাঃ পাষন্ড স্বামি বাঁশখালীতে গ্রেফতার

স্ত্রীর হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা চেস্টাঃ পাষন্ড স্বামি বাঁশখালীতে গ্রেফতার

দু’হাত ও এক পায়ের কবজির গোড়ায় রগ কেটে দিয়ে নিজ স্ত্রীকে হত্যা চেস্টার মূলহোতা পাষন্ড স্বামি ইয়াকুবকে গ্রেফতার করেছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ইয়াকুব সিএমপি’র কর্নফুলী থানার দক্ষিন শাহমীরপুর গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ডের নতুনপড়ার মোহাম্মদ হোসেনের পূত্র। পারিবারিক কলহের জের ধরে পাষন্ড স্বামী বাঁশখালীতে কবিরাজের কাঁছে নিয়ে যাচ্ছিল বলে বাঁশখালীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে এনে তার স্ত্রী খুরশিদা(৩০) কে হাত-পায়ের কব্জি কেটে লাশ নিয়ে যেতে শ্বাশুড়ীর মোবাইলে কল করেছিল সে।

২২ জানুয়ারি’২৩ ইং রবিবার দুপুরে স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টাকারী পাষণ্ড স্বামী ইয়াকুবকে বাঁশখালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দ্রুত সময়ে গ্রেফতার করার পর নিয়মিত মামলা রজু করে আদালতে সোপর্দ করলে আসামী ইয়াকুব বাঁশখালী সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মঈনুল ইসলামের আদালতে তার স্ত্রীকে হত্যা চেস্টার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে পাষন্ড স্বামি ইয়াকুব পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করে।

ঘটনার বিবরনে প্রকাশঃ ইয়াকুবের সাথে একই গ্রামের মৃত আবুল কালামের মেয়ে খুরশিদার সাথে গত ৯ বছর আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়েছিল, বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে ঝগড়া-বিবাদ, দ্বন্ধ-কলহ লেগেই ছিল। তাদের সংসারে ইসকাত (৮) এবং কুমকুম (৬) নামে দুসন্তান রয়েছে। ২১ জানুয়ারী শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টায় স্ত্রী খুরশিদা বেগমকে স্বামী মো. ইয়াকুব কর্নফুলী থানার শাহমীরপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে বাঁশখালীতে এক হুজুরের কাঁছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সুকৌশলে ঘর থেকে বের করে এনে বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের চানপুর পুরানঘাট এলাকায় জনৈক লেয়াকতের বাড়ীর পাশে কলাবাগানে নিয়ে দুহাতের কবজি এবং ডান পায়ের গোড়ালির রগ কেটে দিয়ে হত্যা চেষ্টা করে ফেলে চলে যায়।

হাত-পায়ের রগ কাটা মুমুর্ষ অবস্থায় একটি মহিলাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন বাঁশখালী থানায় ফোন করলে, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে এবং ঘটনার পরপর সাড়াঁষি অভিযান পরিচালনা করে নির্মম এ ঘটনার মুলহোতা ইয়াকুবকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর স্বামী ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার শাশুড়ি রওশন আরা বেগম।

এদিকে গুরুতর আহত খুরশিদা বেগমকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী রওশন আরা বেগম বলেন, আমার মেয়ে খুরশিদা বেগমকে বিয়ের পর থেকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল তার স্বামি ইয়াকুব। ঘটনার দিন দুপুর ২টায় ইয়াকুব ফোনে আমাকে জানিয়েছিল তারা বাঁশখালীর একটি মাজারে হুজুরের কাঁছে যাচ্ছে। ওইদিন বেলা সাড়ে ৩টায় আবার ফোন করে জানায় আমার মেয়ের হাত-পা কেটে দিয়েছে।

বাঁশখালীর পুকুরিয়া চানপুরঘাটে এসে লাশ নিয়ে যেতে। একথা শুনে এসে দেখি মেয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। সে তার নিতর দেহ নিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিল। আমি পাষন্ড স্বামী নামের কলঙ্ক পাষন্ড ইয়াকুবের এমন দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোন স্বামী এমন গর্হিত অমানবিক অপরাধ করার সাহস না পায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টায় গ্রেপ্তার স্বামী মো. ইয়াকুব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button